কোরবানির দিন আকিকার পশু জবাই করা যাবে?

ছবি: সংগৃহীত

 

সন্তান জন্মের পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের উদ্দেশে জন্মের সপ্তম দিনে পশু জবাই করাকে আকিকা বলে। আকিকা করা মুস্তাহাব। হাদিস শরিফে আকিকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসুল (সা.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করে, সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুইটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯৬১)

 

অন্য হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু যবাই কর) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও। (বুখারি, হাদিস : ৫৪৭২) সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আকিকা করা উত্তম। এক হাদিসে সপ্তম দিনে আকিকা করার কথা বলা হয়েছে। (তিরমিজি, হাদিস: ১৫২২)

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) তার দৌহিত্রদ্বয় হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর আকিকা সপ্তম দিনে করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২৮৩৪)

 

তাই সম্ভব হলে সপ্তম দিনেই আকিকা করা উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪ তম দিনে বা একুশতম দিনে করা ভালো। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, আকিকা সপ্তম দিনে হওয়া উচিত। তা সম্ভব না হলে চৌদ্দতম দিনে। তাও সম্ভব না হলে একুশতম দিনে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৬৬৯)
অবশ্য একুশ দিনের মধ্যে করা না হলে পরবর্তীতেও তা আদায় করা যাবে।

সন্তানের আকিকা করার দায়িত্ব তার পিতার। অবশ্য অন্য কেউ বা নিজেও নিজের আকিকা করা জায়েজ আছে।

আকিকার গোশত সন্তানের পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন সবাই খেতে পারবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আকিকার গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং কিছু সদকা করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৬৬৯)

 

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (রহ.) বলেন, আমি আতা (রহ.)-কে বলতে শুনেছি, …আকিকার গোশত তার পরিবার খেতে পারবে এবং হাদিয়াও দিতে পারবে…। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তা কি সদকা করে দিতে হবে? তিনি বললেন, না, তুমি চাইলে খেতে পারো এবং হাদিয়াও দিতে পারো…। ’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস: ৭৯৬৯; ফাতহুল বারি: ৯/৫০৭; ফাতাওয়া বাজ্জাযিয়া: ৩/৩৭০; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩২৬; আলমাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ, কুয়েত: ৩০/২৭৬; তুহফাতুল মাওদুদ বিআহকামিল মাওলুদ: ৭৮)

 

তবে কেউ চাইলে কোরবানির তিন দিনের কোনও একদিন আকিকার পশু জবাই করতে পারবে। কেননা, কোনো হাদীসে এই দিনগুলোতে আকিকা করতে নিষেধ করা হয়নি।

 

আবার কেউ চাইলে কোরবানির পশুতে আকিকার নিয়ত করতে পারবে, এটা নিষেধ নয়, তবে উত্তম নয়। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬)

 

ফাতাওয়া শামীসহ ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবাদিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কোরবানির সাথে আকীকা সহীহ। তবে এক্ষেত্রে ছেলের জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হয়। -(রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৪/১১৬) সূএ :  ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ৪ নদীবন্দরে সতর্কতা, দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা

» সংস্কারের নামে জনগণকে বিভ্রান্ত না করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি রিজভীর

» ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট

» পাইলস প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ

» সারা বছর সুস্থ থাকতে নিয়মিত খান এই ৭টি খাবার

» খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুদের হত্যা করল ইসরায়েলি বাহিনী

» ইয়াবাসহ এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

» মুরগি-সবজির দাম বেড়েছে

» জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ব্যবসায়ী কুপিয়ে হত্যা

» গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ৩ সন্তানসহ একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কোরবানির দিন আকিকার পশু জবাই করা যাবে?

ছবি: সংগৃহীত

 

সন্তান জন্মের পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের উদ্দেশে জন্মের সপ্তম দিনে পশু জবাই করাকে আকিকা বলে। আকিকা করা মুস্তাহাব। হাদিস শরিফে আকিকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসুল (সা.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করে, সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুইটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯৬১)

 

অন্য হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু যবাই কর) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও। (বুখারি, হাদিস : ৫৪৭২) সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আকিকা করা উত্তম। এক হাদিসে সপ্তম দিনে আকিকা করার কথা বলা হয়েছে। (তিরমিজি, হাদিস: ১৫২২)

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) তার দৌহিত্রদ্বয় হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর আকিকা সপ্তম দিনে করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২৮৩৪)

 

তাই সম্ভব হলে সপ্তম দিনেই আকিকা করা উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪ তম দিনে বা একুশতম দিনে করা ভালো। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, আকিকা সপ্তম দিনে হওয়া উচিত। তা সম্ভব না হলে চৌদ্দতম দিনে। তাও সম্ভব না হলে একুশতম দিনে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৬৬৯)
অবশ্য একুশ দিনের মধ্যে করা না হলে পরবর্তীতেও তা আদায় করা যাবে।

সন্তানের আকিকা করার দায়িত্ব তার পিতার। অবশ্য অন্য কেউ বা নিজেও নিজের আকিকা করা জায়েজ আছে।

আকিকার গোশত সন্তানের পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন সবাই খেতে পারবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আকিকার গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং কিছু সদকা করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৬৬৯)

 

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (রহ.) বলেন, আমি আতা (রহ.)-কে বলতে শুনেছি, …আকিকার গোশত তার পরিবার খেতে পারবে এবং হাদিয়াও দিতে পারবে…। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তা কি সদকা করে দিতে হবে? তিনি বললেন, না, তুমি চাইলে খেতে পারো এবং হাদিয়াও দিতে পারো…। ’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস: ৭৯৬৯; ফাতহুল বারি: ৯/৫০৭; ফাতাওয়া বাজ্জাযিয়া: ৩/৩৭০; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩২৬; আলমাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ, কুয়েত: ৩০/২৭৬; তুহফাতুল মাওদুদ বিআহকামিল মাওলুদ: ৭৮)

 

তবে কেউ চাইলে কোরবানির তিন দিনের কোনও একদিন আকিকার পশু জবাই করতে পারবে। কেননা, কোনো হাদীসে এই দিনগুলোতে আকিকা করতে নিষেধ করা হয়নি।

 

আবার কেউ চাইলে কোরবানির পশুতে আকিকার নিয়ত করতে পারবে, এটা নিষেধ নয়, তবে উত্তম নয়। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬)

 

ফাতাওয়া শামীসহ ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবাদিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কোরবানির সাথে আকীকা সহীহ। তবে এক্ষেত্রে ছেলের জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হয়। -(রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৪/১১৬) সূএ :  ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com